পটুয়াখালী প্রতিনিধি,
পটুয়াখালীর বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শিবু লাল দাস ও তার ব্যাক্তিগত গাড়ী চালককে অপহরনের পর ২০ কোটি টাকা মুক্তিপন দাবীর ঘটনায় জড়িত পটুয়াখালী জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আতিকুর রহমান পারভেজসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রবিবার দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের হলরুমে এক প্রেস ব্্িরফিংয়ের মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এ ঘটনার মুল হোতা মো. মামুন ওরফে ল্যাড়া মামুনসহ তিন জন মূল পরিকল্পনাকারীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানানো হয়েছে ব্রিফিংয়ে।
এছাড়াও ল্যাংড়া মামুনসহ তিন পরিকল্পনাকারী ঘটনার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে পলাতক থাকায় ঢাকা মেট্রোপলিটনের ডিবি টিম ও পটুয়াখালীর জেলার একাধিক টিম দেশের বিভিন্ন জায়গায় যৌথ অভিযান পরিচালনা করে অপহরনের কাজে জড়িত সকলকে গ্রেফতারে অভিযান চলমান আছে বলেও প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হয়।
পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ ঘটনার অভিযানে থেকে ভিডিও কন্ফারেন্সে যোগ দিয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে ব্রিফিং করেন। অপরপ্রান্তে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের হলরুমে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মাঈনুল হাসান সাংবাদিকদের সাথে উপস্থিত ছিলেন। এ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল, সদর থানার ওসিসহ পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আসামীরা হলেন, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আতিকুর রহমান পারভেজ, ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আক্তারুজ্জামান সুমন, তার ভাই ছাত্রলীগ কর্মী শামিম আহমেদ, মো. মিজানুর রহমান সাবু গাজী, মো. বিল্লাল ও সাব্বির হোসেন জুম্মান। এরা সকলেই পটুয়াখালীর শহরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।
প্রেসব্রিফিং এ বলা হয়, গত ১১ এপ্রিল সোমবার রাতে শহরের নিজ বাসায় যাওয়ার সময় গলাচিপা উপজেলার হরিদেবপুর-শাখারিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের যে কোন স্থান থেকে শিবু লাল দাস ও তার ব্যক্তিগত প্যাড়াডো গাড়ীসহ চালক মিরাজ অপহরন হন। রাত ১২ টা ২ মিনিট ও ১টা ৫৯ মিনিটের সময় ভিকটিমের মোবাইল থেকে তার স্ত্রীর ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে কল করে অজ্ঞাতনামা ব্যাক্তি জানায় ভিকটিমকে তাদের নিকট আটক করে রেখেছে একই তারিখ ১২ এপ্রিল দুপুর ২টার মধ্যে ২০ কোটি টাকা মুক্তিপন দিলে ভিকটিমকে তারা জীবিত অবস্থায় তাদের কাছে ফেরত দিবে নতুবা তাদের লাশ পাবেন। পরে পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ এর নেতৃত্বে জেলা পুলিশের সকল টিম সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করে শিবু লাল দাসের প্যারাডো গাড়ীটি ১২ এপ্রিল রাত দেড়টায় বরগুনা জেলার আমতলী থানার রহমানিয়া ফিলিং স্টেশন হতে পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। গাড়ীতে থাকা খেলনা পিস্তলের ভাঙঙ্গা অংশ ও বস্তুগত সাক্ষ্য জব্দ করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২৪ ঘন্টার পরে রাত অনুমান সাড়ে ১০টার দিকে শহরের কাজীপাড়া এলাকায় এসপি কমপ্লেক্স শপিং সেন্টারের আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে ল্যাড়া মামুনের ভাড়া গোডাউন থেকে জীবিত অবস্থায় শিবু লাল দাস ও তার ড্রাইভার মিরাজকে দুই হাত, দুই পা, মুখে, চোখে রশি, কাপড় ও কসটেপ দ্বারা বাধা প্লাস্টিকের বস্তা ভর্তি অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ভিকটিমের ছেলে বুদ্ধদেব দাস বাদী হয়ে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। শিবু লাল দাস উদ্ধারের পর চিকিৎসা শেষে পর দিন বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানব›দ্বী প্রদান করেন। মামলার তদন্ত কাজে ভিকটিমের দেয়া তথ্য উপাত্ত, সিসিটিভির ফুটেজ, তথ্য প্রযুক্তির ও প্রচলিত নিয়মে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অত্র ঘটনার মুল পরিকল্পনাকারী নেতৃত্বেদানকারীসহ অপহরন কাজে বিভিন্ন পর্যায়ে অংশ গ্রহনকারীদের সনাক্ত করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থান হতে অভিযান পরিচালনা করে ১৬ এপ্রিল রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে ৬ জন আসামীদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভিকটিমদ্বয়কে অপহরন কাজে ব্যবহৃত হাত, পা, চোখ বাধার জন্য কসটেপ, গামছা, রশি, ২টি প্লাস্টিকের বস্তা এবং সন্দিগ্ধ চুল উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়াও অপহরন কাজে ব্যবহৃত অটো রিক্সা এবং অটোতে থাকা অপর বস্তাভর্তি মাতৃছায়া স্টীকার যুক্ত শপিংব্যাগ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সুপার লিখিত ব্রিফিংয়ে আরও বলেন, এ ঘটনার মুল হোতা মো. মামুন ওরফে ল্যাংড়া মামুনসহ তিন পরিকল্পনাকারী ঘটনার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে পলাতক থাকায় ঢাকা মেট্রোপলিটনের ডিবি টিম ও পটুয়াখালীর জেলার একাধিক টিম দেশের বিভিন্ন জায়গায় যৌথ অভিযান পরিচালনা করে অপহরনের কাজে জড়িত সকলকে গ্রেফতারে অভিযান চলমান আছে।
ব্রিফিংয়ে আরও জানানো হয়েছে, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় ল্যাংড়া মামুনসহ ৩জন অপহরন ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী। শিবু লাল ও তার চালকে অপহরনের পর হাত, পা, মূখ বেধে গাড়ীতে উঠিয়ে এসডিও রোডস্থ মামুনের কথিত গোপন আস্তানায় এনে শারিরিকভাবে অত্যাচার করে আটক রাখা হয়। পর দিন তাকে গুম করার উদ্দেশ্যে তার গোপন আস্তানা হতে এসপি কমপ্লেক্সে এর নীচতলায় পাকিং এর মামুনের গুদামে রাখা হয়। এ ঘটনায় বিভিন্ন স্তরে ১০ হতে ১৫ জন অপহরনকারী জড়িত রয়েছে মর্মে জানান যায় এবং অপহরনকারীরা অত্যন্ত দূর্ধর্ষ।
শিবু লাল দাস পটুয়াখালী শহরের পুরান বাজার এলাকার বাসিন্দা। তিনি স্কয়ার টয়লেট্রিজ ও স্কয়ার ফুড এন্ড বেভারেজ লিঃ এর পরিবেশক। ঠিকাদারি, ব্রীজের টোল আদায়ের ইজারা, খেয়াঘাট ইজারা, চাউলের আড়ৎসহবিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পরিবেশক ব্যবসা করে আসছেন।
কা মুক্তিপন দিলে ভিকটিমকে তারা জীবিত অবস্থায় তাদের কাছে ফেরত দিবে নতুবা তাদের লাশ পাবেন। পরে পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ এর নেতৃত্বে জেলা পুলিশের সকল টিম সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করে শিবুলাল দাসের গাড়ীটি একটি পেট্রোল পাম্প থেকে উদ্ধার করে। ২৪ ঘন্টার পরে শহরের এসপি কমপ্লেক্স শপিংমলের আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে ল্যাড়া মামনুনের গোডাউন থেকে জীবিত অবস্থায় শিবু লাল দাস ও তার ড্রাইভার মিরাজকে উদ্ধার করা হয়। ভিকটিমের জবানবন্দীর ভিত্তিতে বিভিন্ন এলাকা থেকে আলামতসহ প্রাথমিক ভাবে ৬ জন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়। ভিকটিমকে বহনকৃত ব্যাটারী চালিত অটো রিক্সাও উদ্ধার করা হছে।
পুলিশ সুপার লিখিত ব্রিফিংয়ে আরও বলেন, এ ঘটনার মুল হোতা মো. মামুন ওরফে ল্যাংড়া মামুনসহ তিন পরিকল্পনাকারী ঘটনার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে পলাতক থাকায় ঢাকা মেট্রোপলিটনের ডিবি টিম ও পটুয়াখালীর জেলার একাধিক টিম দেশের বিভিন্ন জায়গায় যৌথ অভিযান পরিচালনা করে অপহরনের কাজে জড়িত সকলকে গ্রেফতারে অভিযান চলমান আছে।