গলাচিপা প্রতিনিধি ঃ গলাচিপা উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের ইছাদী গ্রামে এক গৃহবধু রাবেয়া বেগম(৩০) ও তার চাচাত ভাসুরের ছেলে মিজান রাঢ়ীকে (৩৫) সালিশের নামে মাথা ন্যাড়া করাসহ লাঠিপেটা ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাত সাড়ে ৮ টায় গজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে। এ ঘটনায় গৃহবধুর স্বামী হাবিব রাঢ়ী বাদি হয়ে রবিবার গলাচিপা থানায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১০/১২ জনের নামে মামলা করেন।
মামলার বিবরনে জানা যায়,পরকীয়া প্রেমের অভিযোগ তুলে গজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান এম.এ. কুদ্দুস ও ওই ইউনিয়নের সদ্য নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও মোঃ খালেদুল ইসলাম স্বপনের নিদের্শে শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় আশরাফুল ইসলাম টিপু ও এক গ্রাম পুলিশ হাবিব রাঢ়ীর স্ত্রী রাবেয়া বেগম ও হাবিব রাঢ়ীর চাচাত ভাইয়ের ছেলে মিজান রাঢ়ীকে ডেকে নিয়ে গজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের একটি কক্ষে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত আটকে রাখে। এর পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাবেয়া বেগম ও মিজানকে ইউনিয়ন পরিষদের হল রুমে হাজির করে সালিশ বৈঠক বসায়। দেড় ঘন্টাব্যপি বৈঠকের পর রাত সাড়ে ৮ টায় সালিশদের সিন্ধান্ত অনুযায়ী মিজানের ৩০ হাজার টাকা জরিমানা ও ভবনের সামনে মাঠে নামিয়ে প্রকাশ্যে সদ্য নির্বাচিত চেয়ারম্যান রাবেয়া বেগম ও মিজানকে লাঠি পেটা করে। এরপর সালিশদের নির্দেশে পরিতোষ শীল রাবেয়া ও মিজানের মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করে দেয়।
ঘটনার সংবাদ পেয়ে শনিবার গভীর রাতে গলাচিপা পুলিশ নির্যাতিত ওই গৃহবধূকে বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে। তবে নির্যাতিত মিজান লোকলজ্জায় আত্মগোপন করেছে। এ ঘটনায় গৃহবধূর স্বামী মোঃ হাবিব রাঢ়ী রবিবার সাতজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০/১২ জনকে আসামি করে গলাচিপা থানায় মামলা দায়ের করেছে। আসামিরা হচ্ছে- গজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান এম.এ. কুদ্দুস, ওই ইউনিয়নের সদ্য নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও গলাচিপা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোঃ খালেদুল ইসলাম স্বপন, ইউনিয়ন কৃষক লীগের আহ্বায়ক মোঃ শামসুল হক ডাকুয়া, আশরাফুল ইসলাম টিপু, মোঃ নিজাম মেম্বার, আঃ মন্নান মৌলভী ও মোঃ নাসির মাওলানা। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) খন্দকার রফিকুল ইসলাম জানান, নির্যাতিত গৃহবধূকে ২২ ধারায় জবানবন্দী গ্রহণের জন্য উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের জোর চেষ্টা চলছে ।