মজিবুর রহমান বিশেষ প্রতিনিধি ঃ পটুয়াখালীর দুমকিতে জনতা কর্তৃক ধৃত চাঞ্চল্যকর ফাতেমা হত্যা মামলার অন্যতম পালাতক আসামী মোস্তফা মোল্লাকে (৪৫) পুলিশে দেয়ার পর ৩ দিন যাবৎ থানা হাজতে রেেয়ছে! গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নিহত গৃহবধু ফাতেমার পিতৃ গ্রামের বিক্ষুব্ধ জনতা বোর্ড অফিস বাজারের একটি চায়ের দোকান থেকে ধরে এনে থানায় সোপর্দ্দ করলেও ৩দিন যাবৎ পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। কোর্টে চালান না করে পুলিশ হেফাজতে রাখায় জনমনে বিরুপ প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। পুলিশের বলছে গ্রেফতারকৃত আসামী উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীণ আছে।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, উপজেলার পালাতক আসামী মোস্তফা মোল্লা মুরাদিয়া বাজারের একটি চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছিল এমন সংবাদের ভিত্তিতে গত শুক্রবার বিকেলে নিহত গৃহবধু ফাতেমা বেগমের বাবার বাড়ি রাজাখালী গ্রামের বিক্ষুব্ধ জনতা তাকে ধরে এনে থানায় সোপর্দ্দ করে। ধৃত মোস্তফা নিহত গৃহবধু ফাতেমা বেগমের ননদ জামাই এবং হত্যা মামলার এজাহার ভুক্ত ২ নম্বর আসামী। গত ২০ মে-২০১৫ উপজেলার উত্তর মুরাদিয়া গ্রামের সোবাহান হাওলাদারের ছেলে হান্নান হাওলাদারের নব-পরিনীতা স্ত্রী ফাতেমা বেগমের (১৮) রহস্যজনক মৃত্যু হয়। স্বামী পরিবারের পক্ষ থেকে এটিকে আত্মহত্যার প্রচারণা দিলেও ফাতেমার পিতৃস্বজনরা তা মানতে পারেনি। যৌতুক দাবিতে শ্বশুর-পরিবারের অমানুষিক অত্যাচার-নির্যাতন এবং বেদম মারধরে ফাতেমাকে খুন করার দাবি করে নিহতের দিনমজুর বাবা নুরুল ইসলাম খান বাদি হয়ে দুমকি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলা নং ৮/৩০, তারিখ-২০মে’১৫। মামলা দায়েরের পর থেকেই আসামীরা বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। এদিকে লাশের ময়না তদন্ত রিপোর্টের অপেক্ষায় হত্যা মামলার তদন্ত কার্যক্রমও মন্থর হয়ে পড়ে। মামলার বাদি নুরুল ইসলাম অভিযোগ করে সাংবাদিকদের জানান, আসামী পক্ষ অর্থ-বিত্তের জোড়ে থানা পুলিশ ও ময়না তদন্তের রিপোর্ট প্রভাবিত করতে শুরু থেকেই তৎপড়তা চালাচ্ছে। লাশের শরীরে নির্যাতনের আলামত থাকলেও সুরত হাল রিপোর্টে পুলিশ তা যথাযথ ভাবে উল্লেখ করেনি। আসামী গ্রেফতারেও পুলিশের তৎপড়তায় গা-ছাড়া ভাব লক্ষ্যকরা গেছে। একারনেই বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা খবর পেয়ে ২নং আসামীকে ধরে এনে পুলিশে সোপর্দ করে।
দুমকি থানার অফিসার ইনচার্জ আজম খান ফারুকী জনতা কর্তৃক আসামী ধরে দেয়া এবং গ্রেফতার দেখানোর সত্যতা স্বীকার করে বলেন, গণপিটুনীতে আহত আসামীকে পুলিশি প্রহরায় উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং চিকিৎসাধীণ আছে।
উল্লেখ্য, গত ১১এপ্রিল উপজেলার রাজাখালী গ্রামের দিনমজুর নুরুল ইসলামের কন্যা ফাতেমা বেগম (১৮) কে উত্তর মুরাদিয়া গ্রামের সোবাহান হাং ছেলে হান্নান হাং কাছে মহা-ধুমধাম করে বিয়ে হয়। দিনমজুর নুরুল ইসলাম বিয়েতে ধারদেনা করে খাট, আলনা, শো-কেস, বিছানাপত্র ও লক্ষাধিক টাকার সোনার গহনা দিয়ে মেয়েকে জামাইয়ের বাড়ি তুলে দেয়। পরের সপ্তাহে জামাই হান্নানের চাহিদা মতে গরু কেনার জন্য নগদ ১০হাজার টাকা দেয়। বাকী টাকার জন্য নববধুকে চাপ সৃষ্টি করছিল। এ অবস্থায় মাত্র ২০দিনের মাথায় ফাতেমার আকস্মিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।