
এম. রহমান, দুমকি : পটুয়াখালীর দুমকিতে দেড় যুগেও এমপিও’র দেখা পায়নি পাঙ্গাশিয়া কলেজের শিক্ষক- কর্মচারীরা। ফলে কলেজটির ২৩ শিক্ষক-কর্মচারীর চাকুরীতে অনিশ্চয়তার পাশাপাশি পারিবারিক জীবন দু:র্বিষহ হয়ে ওঠেছে। শুধুমাত্র এমপিও অন্তর্ভূক্তি না থাকার কারনে প্রত্যন্ত দুর্গম এলাকার ভালো ফলাফলের কলেজটির ২৩ শিক্ষক-কর্মচারী ও ৩ শতাধিক শিক্ষার্থীর ভবিষ্যত নিয়ে চরম অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র জানায়, পটুয়াখালী জেলা শহরের ১৫ কিলোমিটার এবং উপজেলা শহরের অন্তত ১০কি.মি. দুরত্বের দুর্গম এলাকায় ১৯৯৮ সালে পাঙ্গাশিয়া কলেজটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। পশ্চাৎপদ এলাকার নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানদের উচ্চশিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে স্থানীয় শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গ কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০০-২০০১ সেসনে স্বীকৃতি পেয়ে কলেজটির একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই অপেক্ষাকৃত ভালো লেখা-পড়া, সন্তোষজনক ফলাফল করায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ সর্বস্তরে কলেজটির সুনাম অর্জণ করেছে। বিগত ২০১০ সাল থেকে প্রতিবছরের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় শতকরা ৮০ভাগ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়ে আসছে। কিন্তু বরাবর ভালো ফলাফল করলেও এমপিও করা হয়নি। গত দেড়যুগ ধরে এমপিও বিহিন থাকায় কলেজটির ২৩ শিক্ষক-কর্মচারীর পারিবারিক জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। বেতন-ভাতা বিহীন টানা দেড় যুগ যাবৎ চাকুরীরত শিক্ষক-কর্মচারীরা নি:স্ব হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে। কলেজ অধ্যক্ষ মো: আবু জাফর আক্ষেপ করে জানান, প্রত্যন্ত এলাকার সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর ছেলে-মেয়েদের উচ্চ শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে গ্রামীণ পরিবেশে কলেজটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এলাকার কৃষিজীবীসহ নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষের ছেলে মেয়েরা এখানে উচ্চ শিক্ষা গ্রহনের সুযোগ পাচ্ছে। কিন্ত প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, কাঙ্খিত ছাত্র-ছাত্রী ও প্রতিবছরের এইচ,এস,সি পরীক্ষায় সন্তোষজনক ফলাফল করে আসলেও কলেজটি এমপিওভুক্ত করা হয়নি। আর এমপিওভুক্ত না হওয়ার কারনেই বেতন-ভাতা বঞ্চিত শিক্ষক-কর্মচারীরা মারাত্মক অর্থ কস্টের শিকার হয়েছেন। এমপিওভুক্তির আশায় সহায় সম্পদ বিক্রি করে বছরের পর বছর বিনে বেতনে চাকুরী করায় শিক্ষক-কর্মচারীরা এখন ধার-দেনায় জর্জড়িত হয়ে পড়েছেন। ইতোমধ্যে অর্থকস্ট সামাল দিতে না পেরে ২/৩জন শিক্ষক চাকুরী ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গেছেন, আর বাকীরা বর্তমানে খেয়ে না খেয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়মিত ক্লাশ, পরীক্ষাসহ একাডেমিক কার্যক্রম অব্যহত রেখে আসছেন। বর্তমান ২৩জন শিক্ষক-কর্মচারী ও প্রায় তিন শতাধিক ছাত্র-ছাত্রীর ভবিষ্যত বিবেচনায় রেখে তারা অবিলম্বে কলেজটি এমপিওভুক্তর দাবী করেছেন। কলেজ গভর্নিংবডির সভাপতি দুমকি উপজেলা চেয়ারম্যান মো: শাহজাহান সিকদার কলেজটির দুরাবস্থা লাঘবে ও শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ অক্ষুন্ন রাখার স্বার্থে অবিলম্বে এমপিও ভুক্তির জন্য বর্তমান সরকারের শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি ও প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।