কামরুজ্জামান বাঁধন,মির্জাগঞ্জ(পটুয়াখালী)প্রতিনিধিঃ
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের সুবিদখালী বন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরনো ভবনটি ঝুঁকিপূর্ন হয়ে উঠেছে। ভবনের ছাদ ও দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ছে অনবরত। সামান্য বৃষ্টিতেই ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে শ্রেনীকক্ষে। ফাটল ধরেছে ভবনের বিভিন্ন কক্ষের দেয়ালে। প্রায় সময়ই পলেস্তরার টুকরো খসে পড়ে ছোটখাটো দুর্ঘটনার শিকার হয় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় ছাদ কিংবা ভবন ধসে পড়ার আশঙ্কা থাকলেও ঝুঁকিপূর্ন ভবনেই শিশু শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। বিদ্যালয়টি ঝুঁকিপূর্ন বিধায় একাধিকবার বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উপজেলা শিক্ষা অফিসকে অবহিত করলে সম্প্রতি উপজেলা শিক্ষা অফিসার সরেজমিনে পরিদর্শন করেন।
সরেজমিন গিয়ে শিক্ষকদের সাথে আলাপ বলে জানা গেছে, ১৯৯৪ সালে এলজিইডি বিভাগ উপজেলার সুবিদখালী বাজারে চারকক্ষ বিশিষ্ট সুবিদখালী বন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এরমধ্যে প্রধান শিক্ষক ,অন্য শিক্ষকদের কক্ষ ও শিক্ষার্থীদের ক্লাশরুম। প্রতিটি শ্রেনী কক্ষের ভিতরে ছাদের আস্তর খসে পড়ে রড বেড়িয়ে গেছে। প্রতিদিনই খসে পড়ছে পলেস্তরা। ব্যবহার অযোগ্যে থাকার পরেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষকরা বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাশ চালিয়ে যাচ্ছেন। যে কোন সময়ে বিদ্যালয়ের ভবনটি ধসে পড়ে বড় ধরনের দূর্ঘটনার ট্রাজেডির ঘটনা ঘটতে পারে বলে কর্মরত শিক্ষক ও স্থানীয়রা আশংকা করছেন। শ্রেনীকক্ষ সল্পতাসহ নানা সমস্যায় বর্তমানে বিদ্যালয়টির শিক্ষাকার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যালয়টি ঝুঁকিপূর্ন হওয়ার কারনে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীও অভিভাবকরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের একটি নতুন ভবন নির্মানের দাবি জানিয়েছেন। শিক্ষকরা জানান, বিদ্যালয়ে মোট ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ১০০ জন ও ৫ জন শিক্ষকের স্থানে রয়েছে ৪ জন। পুরোনো ভবনটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় সকল শ্রেনী কক্ষে কাজ চালানো সম্ভব হয় না।
শিক্ষার্থীরা জানায়, ক্লাশ করতে ডর (ভয়) লাগে কোন সময় ছাদ ভাইংগা (ভেঙ্গে) মাথার উপরে পড়ে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবদুল মান্নান খান বলেন, বিদ্যালয়টি অনেক বছর পুরনো। প্রতিবছর সংস্কার করেও কোন কাজ হচ্ছে না। বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা স্যারকে জানানো হয়েছে এবং সে পরিদর্শন করেছেন। স্কুলের জমি সীমানা নিয়ে একটু জটিলতা রয়েছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১৪২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ২০টি ঝুঁকিপূর্ন বিদ্যালয় রয়েছে। ইতিমধ্যে অনেকগুলো পুরাতন বিদ্যালয় নিলাম শেষে এখানে নতুন ভবন নির্মান করা হয়েছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ সাইফুল ইসলাম সোহাগ মৃধা বলেন, কক্ষ সংকটসহ ঝুঁকিপূর্ন ভবনে শিক্ষার্থীদের নিয়ে আতংকের মধ্যে পাঠদান চালাতে হচ্ছে। তবে সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হলেও কোন কাজ হয়নি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ রিয়াজুল হক বলেন, সুবিদখালী বন্দর স্কুলসহ মির্জাগঞ্জে অনেক স্কুল ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তবে বিদ্যালয়ের ভবন নির্মানের জন্য জমি নিয়ে কিছু জটিলতা রয়েছে। বিদ্যালয়ের সীমানা নির্ধারন হয়ে গেলে নতুন ভবন নির্মানের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে এবং বরাদ্ধ এলেই নতুন ভবনের কাজ শুরু করা হবে। ##
মির্জাগঞ্জে ঝুঁকিপূর্ন ভবনে
চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান
Recent Comments
Hello world!
on